ALL Bangla Post

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় ও হওয়ার কারণ বিস্তারিত

মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার নানান কারণ রয়েছে ,আমরা অনেকেই হয়তো উপলব্ধি করি কিন্তু সঠিক ব্যবস্থা নেই না বা সময়ের অভাবে কোন টিপস মেনে চলতে চাই না। মানুষ হল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব। তাদের চলাফেরার ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। নামতে হয় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে। কিন্তু তাহাতে যদি হয় বাধার সৃষ্টি,  তাও আবার মুখের জন্য।

মানুষের সৌন্দর্য হলো চেহারা এবং মুখের কথা কিন্তু মুখ থেকে কথা বলতে গেলে বেরিয়ে আসে ভীষণ দুর্গন্ধ। যাতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে যায়,থুতু ফেলে তার সাথে কথা বলতে চায় না। বিভিন্ন রকমের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যারা মুখের দুর্গন্ধ নিয়ে সমস্যায় আছেন তাদের জন্য আজকের এই হেলথ টিপস বাংলা ভাষায় বিস্তৃত আলোচনা করা হলো।

মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ সমূহ

মুখের লালা শুকিয়ে গেলে:

প্রতিটি মানুষের মুখে একটি লালাগ্রন্থি থাকে। সেই গ্রন্থিটি শুকিয়ে গেলে বা মুখে পানি না থাকলে তাহলে মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এই লালার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কারণ গুলো পুনরায় আবার আলোচনা করা হবে।

এলার্জির কারণে:

বিভিন্ন রকমের কোল্ড এলার্জি থাকলে। যেমন সর্দি ,কাশির কারণে ফুসফুসে সমস্যা দেখা দিলে বা নাক থেকে শ্বাস নিতে কষ্ট হলে দুর্গন্ধ দেখা দিতে পারে।

স্টোমাকে সমস্যা হলে-

আরেকটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। বিশেষ করে চুকা ঢেকুর উঠলে বা মুখের ভিতরের টকটক অনুভূতি হলে গলায় জ্বালাপোড়া করলে। বুকের ভিতর ব্যথা অনুভূতি হয়। এধরনের ক্ষেত্রে মুখের দুর্গন্ধ হয়ে থাকে।

লিভারের সমস্যা দেখা দিলে-

মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল লিভার।  এটি বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় তার ভিতরে একটি হল লিভার সিরোসিস বা চর্বি জাতীয় খাবার হজম করতে সহায়তা করে। তাহাতে অসুবিধা হলে মুখে দুর্গন্ধ দেখা দেয়। 

সঠিক নিয়মে দাঁত না মাজলে-

সঠিক নিয়মে দাঁত না মাজলে দাঁত এর ভিতর ময়লা থেকে যায় যার কারণে এটি ব্যাকটেরিয়া রূপান্তরিত হয় এবং খাবার এর কণা গুলি পচে যায় এবং মুখ থেকে গন্ধ বেরিয়ে আসে।

দাঁতের ক্যাভিটি হলে

 মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার বিস্তারিত
মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার বিস্তারিত

বিভিন্ন সমস্যার কারণে দাতে দাঁতের ক্যাভিটি হয়ে থাকে। সেই ক্যাভিটি গুলি যদি পুটিং করা না হয় বা ওয়াশ করা না হয় তাহলে মুখের দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সময়ই গ্রাম অঞ্চলে দেখা যায় দাঁতের গোড়া ভেঙ্গে এনামেল এবং ডেন্টিন ভেঙ্গে গিয়ে  মাড়ির সাথে মিশে যায় এবং তা থেকে রক্ত বের হয়। সহজেই ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না সেই ধরনের ক্ষেত্রে মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে।

জিনজিভাইটিস হলে-

মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার আরেকটি বড় কারণ হল মাড়িতে জিনজিভাইটিস হওয়া। এটি হলে মাড়ি গোড়া থেকে রক্ত, পুঁজ বের হওয়া এমনকি দাতে বড় ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে এই ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না খাওয়া-

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া না হলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করার কারণেও অনেক সময় পানি খাওয়া হয়না বা অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়।

সিফিলিস জাতীয় রোগ হলে-

সিফিলিসের লক্ষণ গুলি অনেক সময় মুখের ভিতর প্রকাশ পায়। এটি হতে পারে বিভিন্ন রকমের ক্ষত বা বিভিন্ন রকমের ইনফেকশন হতে পারে হয়ে থাকে এর জন্য মুখে দুর্গন্ধ হয়।

রোজা অবস্থায়:

রমজানের রোজা রাখলে মুখে পানিস্বল্পতা দেখা দেয় এবং সারাদিন মুখে কিছুই খাওয়া পরে না এর জন্য মুখে হালকা গন্ধ বের হতে পারে। এটি সাধারণত বিকেল দিকে হতে পারে।

ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে গেলে:

যাদের শরীরে ডায়াবেটিস এর সংখ্যা অনেক বেশি তাদের মুখের দুর্গন্ধ হয়ে থাকে।কেননা এই রোগটিকে বলা হয় অনেকগুলি সিমটমের সমষ্টি।

বাথরুম কষার সমস্যা থাকলে-

যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে বা বাথরুম করতে গেলে অনেকটা কোথ দিতে হয় বা বাথরুমে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা যায় তাদের ক্ষেত্রে দুর্গন্ধ হতে পারে।

প্রধান মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়

যাদের মুখের দুর্গন্ধ অত্যন্ত বেশি তাদের জন্য নিম্নে কিছু গবেষণামূলক টিপস দেওয়া হলো সেগুলো মেনে চললে ইনশাআল্লাহ সুস্থ হবেন।

  • সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। সকালে খাওয়ার পর এবং রাতে খাওয়ার পরে অবশ্যই দাঁত মাজতে হবে এবং এর ভিতরে কোন একসময় ঘুমিয়ে গেলে  ঘুম থেকে উঠে সাথে সাথে হাতের আঙ্গুলের মাথায় কিছু ভালো পেস্ট নিয়ে দাঁতের গোড়ায় ব্যবহার করতে হবে এবং এক মিনিট রেখে দিয়ে ভালো করে কুলি করলে আশা করি দাঁতের দুর্গন্ধ কিছুটা কমবে।
  • পর্যাপ্ত পরিমান সঠিক নিয়মে পানি পান করতে হবে এটি সাধারণত নির্ভর করে আবহাওয়ার উপর অতিরিক্ত গরম পড়লে কিছু সময় পর পর পানি খেতে হবে এবং যদি অতিরিক্ত শীত পড়ে তাহলে কমিয়ে পরিমাণ মতো পানি পান করতে হবে।
  • দাঁতের গোড়ায় অতিরিক্ত ময়লা থাকলে ভালো ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে দাঁত স্কেলিং করতে হবে।
  • ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
  • মাড়িতে জিনজিভাইটিস হলে অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে।
  • পরিপাকতন্ত্রের গোলযোগ দেখা দিলে অবশ্যই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন করতে হবে সাথে প্রয়োজনীয় টিপস মেনে চলতে হবে।
  • সবুজ শাকসবজি,ছোট বাটির এক বাটি করে তিনবার খেতে হবে।
  • বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাউথওয়াশ পাওয়া যায় সেগুলো সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে।
  • পচা ও ভাঙ্গা থাক, ভালো ডাক্তার দিয়ে তুলে ফেলতে হবে।
  • প্রতিদিন খাবার পর হালকা গরম লবণ পানি মিলিয়ে কুলকুচি করতে হবে।
  • নিম গাছের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করতে হবে দুইবার।

শেষ কথা: আপনারা যদি এই নিয়ম গুলি মেনে চলেন আশা করি আপনারা অধিক উপকৃত হবেন এবং এতকিছু করার পরেও যদি উপকৃত না হন তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।

আরো জানুন: হোমিও ওষুধের নাম ও কাজ, চিকিৎসা, খাওয়ার নিয়ম।

Please subscribe to my channel and follow

Facebook Page

YouTube